ভারতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেয়ার পর ৪৪৭ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এসব অসুস্থদের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা ও বমিভাব দেখা গেছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অসুস্থদের মধ্যে তিনজনকে ।এদিকে উত্তরপ্রদেশের একটি সরকারি হাসপাতালের একজন কর্মী টিকা নেয়ার ২৪ ঘণ্টা পর মারা গেছেন। তার বয়স ৪৬ বছর। তবে জেলার প্রধান মেডিকেল অফিসার বলেছেন, টিকা নেয়ার সাথে এই মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক নেই।
উত্তরপ্রদেশের সরকার বলছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হার্ট ও ফুসফুসের রোগজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে বলা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অসুস্থদের মধ্যে যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাদের ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর দুইজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। তাদের একজনকে দিল্লির উত্তর রেলওয়ে হাসপাতাল থেকে ও আরেকজনকে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অপর একজন এখনো উত্তরখন্ডের এআইআইএমএসের রিসিকেশ হাসপাতালে পর্যবেক্ষণাধীন রয়েছেন।
এসব উপসর্গকে টিকাদানের বিরূপ প্রতিক্রিয়া যেটাকে অ্যাডভার্স ইভেন্ট ফলোইং ইমিউনাজেশন (এইএফআই) বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। যার সাথে সরাসরি টিকা বা টিকাদান প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্পর্ক নাও থাকতে পারে।
দেশটিতে গত শনিবার করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সারাদেশের তিন হাজার ছয়টি কেন্দ্রে একইসাথে টিকাদান কর্মসূচির সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল রবিবার (১৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত দেশটিতে মোট ২ লাখ ২৪ হাজার ৩০১ জনকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। দেশব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে ছয়টি রাজ্যে ৫৫৩টি কেন্দ্র থেকে দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, গুরুতর এইএফআইয়ের পদ্ধতিগত তদন্ত ও কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য প্রোটোকলও রয়েছে।
অন্যান্য নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা যেনো ব্যাহত না হয় সেজন্য ভারতের সব রাজ্যকে সপ্তাহে চারদিন কভিড-১৯ টিকাদান চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু রাজ্য ইতিমধ্যে সপ্তাহে কোন কোন দিন টিকা দেয়া হবে তা জানিয়ে দিয়েছে।
ভারতের সবচেয়ে বড় টিকাদানের এ কর্মসূচিতে দুই ধরণের কভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছিল। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনটি ভারতের সব রাজ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের তৈরি কোভ্যাক্সিন দেশটির ১২টি রাজ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। -ইউএনবি ও বিবিসি